কাপাসিয়া (গাজীপুর) থেকে শামসুল হুদা লিটনঃ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গভীর রাতে ৮ম শ্রেণির ছাত্রীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তদের দ্রæত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা করেছেন গ্রামবাসী। এ সময় বক্তব্য রাখেন-মামুন মিয়া, শামসুদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন, রেহেনা খাতুন, শামসুন নাহার, ফাতেমা বেগম, আলপনা খাতুন, বকুলা বেগম, সোহাগ, মানিক, ফিরোজা বেগম, আতাব উদ্দিন, সবুজ জরিনা, মুক্তা, তুহিন, সুলতানা বেগম প্রমুখ।
ধর্ষিতার পরিবার জানান, মামলার পর থেকে অভিযুক্তরা মামলা তুলে নেয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ আগস্ট শুক্রবার রাতে উপজেলার টোক ইউনিয়নের নয়াসাঙ্গুন এলাকার রফিকুলের পানের বরজের পাশে রাস্তায়। এ ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা (নং- ৯/১) দায়ের করেন।
সরজমিনে জানা যায়, ওই ছাত্রী (১৩) স্থানীয় সুলতানিয়া মামুনিয়া দাখিল মাদরাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাবা কৃষক, ‘মা’ দশ বছর ধরে প্রবাসে (জর্ডান) থাকেন। শিশুকাল (দুই বছর বয়স ) থেকেই সে তার দাদির সাথেই থাকে।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাত ২ টার দিকে কে বা কাহারা তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আটকে রেখে রাতভর ধর্ষণ করে এবং পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেশী কাদির মাষ্টারের ছেলে মোক্তার লোক ভাড়া করে এ কান্ড ঘটাতে পারে বলে মেয়ের বাবা ও এলাকাবাসীর ধারণা। শুক্রবার দিনের বেলায় মেয়ের চাচা আসাদুলের সাথে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়েছে মোক্তারের। এর আগেও একাধিকবার তুচ্ছ ঘটনায় মোক্তার তাদের সাথে বিরোধে জড়িয়েছেন বলে জানায় পরিবার।
ধর্ষিতার দাদি জহুরা জানায়, আমি আমার নাতনিকে নিয়ে টিনের ঘরে থাকি। শুক্রবার রাতে দুইজন এক সাথে ঘুমাইয়া ছিলাম। এইদিন রাত আনুমানিক ২টার দিকে টিনের বেড়া কেটে দরজা খোলে তিন জন লোক ঘরে আইয়া আমার গলায়, মাথার উপড়ে ছুড়ি ধরছে। কইছে চিৎকার চেঁচামেচি করলে মেরে ফেলবে। পরে কইছে আমার নাকের, কানের ও গলার গয়না (অলংকার) খুইল্লা দিতাম। আমার পড়নের কাপড় দিয়া হাত-পা বানছে। পরে আমার নাতনিরে হাত, মুখ ও পা বাইন্দা নিয়া গেছে। আশপাশে লোকজন সহ অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেখি মেয়ে আজানের আধঘণ্টা আগে বাড়ি আসছে। তখন রাত আনুমানিক চারটা বাজে।
মেয়ের বাবা বলেন, আমার মেয়ে কাউকেই চিনতে পারেনি। তবে যারা ধর্ষণ করেছে তার পড়নে শার্ট ও লঙ্গী ছিলো। তবে আমার সন্দেহ প্রতিবেশী কাদির মাস্টারের ছেলে মোক্তার তার সহযোগীদের দিয়ে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। সে ছাড়া আমার কোন শত্রæ নেই। তাকে ছাড়া কেউ এমন জঘন্যতম কাজ করবেনা। ১৫ আগস্ট রবিবার অজ্ঞাত তিনজনকে অভিযুক্ত করে কাপাসিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ছাত্রীর বাবা।
এদিকে সন্দেহযুক্ত মোক্তার ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। মোক্তারের বাড়িতে গিয়ে ও মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার কথা বলা যায়নি।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আলম চাঁদ জানান, এঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাদরাসা ছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে বের করতে পুলিশের একাধিক দল ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। শীঘ্রই জড়িতদের খোঁজে বের বরা সম্ভব হবে।