অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটনঃ কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা- বানার নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ ভেসে উঠছে। নদীর দুপারের গ্রামের মানুষের মাঝে মাছ ধরার হিড়িক পড়েছে। নদীতে চলছে মাছ ধরার মহোৎসব। ১৮ মে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মাছ ধরতে শুরু করেন নদী তীরবর্তী গ্রামের মানুষ। মাছ ধরতে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বয়োবৃদ্ধ নারী, পুরুষ থেকে শুরু করে যুবক, কিশোর এমনকি শিশুরাও নদীতে নেমে মাছ শিকার করতে দেখা যায়। কাপাসিয়ার টোক থেকে শুরু করে রানীগঞ্জ -তারাগঞ্জ- চরসিন্দুর – পলাশ -ঘোড়াশাল হয়ে কাঞ্চন পর্যন্ত নদীর পানিতে মরে ভেসে উঠে দেশীয় নান জাতের মাছ।
এ অঞ্চলে দেশীয় মাছের বড় উৎস হলো শীতলক্ষ্যা – বানার নদী। এ সব নদীর মাছের উপর প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই নির্ভরশীল গাজীপুর – নরসিংদী সহ নদী তীরবর্তী উপজেলার সাধারণ মানুষ। নদীর পানিতে ভেসে উঠা মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, কাতলা, কালবাউস, বাইম, গুতুম, বোয়াল, আইর, চিতল, গোলায়া, পুটি, শরপুটি,বাইল্লা, বড় চিংড়ি, ছোট চিংড়ি, শইল, টাকি, চাপিলা,কেচকি, মলা, বাছা, হিডা, হিলুন, গাউরা মাছ।
কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আজগর রশীদ খান অনেকটা ক্ষুব্ধ কন্ঠে আক্ষেপ করে বলেন, ” বার বার শিল্পকারখানার বর্জ্যও বর্জ্য মিশ্রিত দূষিত পানির কারণে আমাদের এলাকার দেশীয় মাছের প্রধান কেন্দ্র ভূমি শীতলক্ষ্যা- বানার নদী আজ মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে। সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পলাশ ও ভালুকা অঞ্চলের শিল্প- কলকারখানার গ্যাস – বর্জ্য শীতলক্ষ্যা – বানার নদীর পানিতে ছাড়ার কারণে মাছ অক্সিজেনের অভাবে দুর্বল হয়ে মরে যাচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে সাংবাদিক ও পরিবেশবাদীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এলাকাবাসী জানান, কাপাসিয়ার উত্তরে পাশ্ববর্তী উপজেলার সুতিয়া ও খীরু নদী হয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা অঞ্চলের শিল্পবর্জ্যমিশ্রিত পানি এসে বানার নদীতে ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে মিশে যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় পলাশ অঞ্চলের শিল্প-কারখানার বর্জ্য- গ্যাস নদীর পানিতে মিশে শীতলক্ষ্যার পানিকে মারাত্মক ভাবে বিষাক্ত করে। এসব কারণে কারণে অক্সিজেনের অভাব অভাব দেখা দেয়ায় মাছ দুর্বল হয়ে ভেসে উঠে এবং মারা যায়। বার বার এসব ঘটনা ঘটলেও দেখার যেন কেউ নেই।