বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারি সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মার্চ মাস থেকে দেশের সকল প্রকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে প্রায় ৬০ হাজার কেজি স্কুলে দশ লাখ শিক্ষক শিক্ষাদান করে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতে প্রায় পাঁচমাস যাবৎ ঐ সমস্ত শিক্ষকদের বেতন বন্ধ রয়েছে। এর কারণ শিক্ষকদের বেতন সম্পূর্ন শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি এর উপর নির্ভরশীল। আবার বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই ভাড়া ভবন নিয়ে পরিচালনা করছে। এমন সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে বার বার সরকারের কাছে আর্থিক প্রনোদনা চেয়ে আবেদন করা হলেও কোন সু-ফল আসেনি। এদিকে দিন দিন স্বাভাবিক হচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা। এক এক করে খুলে যাচ্ছে গনপরিবহণ, হাট-বাজার, বিনোদন কেন্দ্র, মসজিদ, মাদ্রাসা।
করোনার প্রকুপে যখন মানুষ ঘরবন্দি তখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করা হল শিল্প প্রতিষ্ঠান। ধারনা করা হয়েছিল এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। এরপর পযার্য়ক্রমে, যানবাহন,হাট-বাজার, বিনোদন কেন্দ্র, মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হয়। এখন আর কোথাও তেমন সামাজিক দূরত্ব বা নিরাপত্তার কোন বালাই খুঁজে পাওয়া যায়না।
এই সুযোগে বেকার ছাত্র-ছাত্রীরা নানান অপরাধ মূলক কাজে জরিয়ে পড়ছে। করোনা ভাইরাসের আক্রমন রোধে স্কুল কলেজ বন্ধ করা হলেও সে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে রাস্তাঘাটে অবাধ চলাফেরা করছে। বেড়েগেছে বাল্যবিবাহ, অল্প বয়সে এমন অনেক স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের উপরে তুলে দেওয়া হচ্ছে সংসারের চাপ। মানুষিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে শিশু কিশোররা। অনলাইন ক্লাস সর্ম্পকে কর্তব্য ব্যাক্তিরা বয়ান দিয়ে থাকেন যে, ৯৮-৯৯% শিক্ষার্থী নাকি অনলাইনে ক্লাস করে। তবে প্রকৃত হার নির্ণয় করলে তার কিছুই পাওয়া যাবেনা। বরঞ্চ এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার সুযোগে বিভিন্ন পর্নোগ্রাফি, গ্রুপ চ্যাট, এমনকি পাবজি, ফ্রী ফায়ারসহ বিভিন্ন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ছে। গত কয়েক মাস ধরে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারনে শিক্ষার্থীরা লেখা পড়া প্রায় ভুলে যেতে বসেছে। প্রতিনিয়ত লিখালেখির চর্চা না থাকায় বহু শিক্ষার্থীদের হাতের লেখা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে অনেকেই। এমতাবস্থায় সরকারের নিকট বিনীত আবেদন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলার অনুমতি প্রদান করলে সারা বাংলাদেশের দশ লাখ অসহায় শিক্ষকরা তাদের কর্মজীবন ফিরে পেতেন । আমরা প্রনোদনা চাইনা। আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বাস্থবিধি মেনে শিক্ষাকার্যক্রম চালু করতে চাই।